Afghanistan: তালিবানের ভয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মহিলাদের শেল্টার হোম

গতমাসে আফগানিস্তানে তালিবানরা ক্ষমতা দখলের পর থেকে সারা দেশে একাধিক সেফ হাউস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বাড়িতে হিংসার শিকার মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ আশ্রয় হারিয়েছেন।
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি ছবি সৌজন্য রেডিও ফ্রী ইউরোপ

গতমাসে আফগানিস্তানে তালিবানরা ক্ষমতা দখলের পর থেকে সারা দেশে একাধিক সেফ হাউস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বাড়িতে হিংসার শিকার মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ আশ্রয় হারিয়েছেন।

আরএফই/আরএল জানাচ্ছে আফগানিস্তানের নতুন তালিবান সরকার এখনও মহিলাদের সেফ হাউস নিয়ে নির্দিষ্ট কোন নীতি না নিলেও এর আগে তালিবানরা মহিলাদের সেফ হাউসগুলোকে বেশ্যালয় আখ্যা দিয়েছিল। তাই সমাজকর্মীদের আশঙ্কা ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী সেগুলি বন্ধ করে দেবে।

প্রায় ২০ বছর ধরে ঘরোয়া নিপীড়ন, যৌন নির্যাতন এবং জোর করে বিয়ে দেওয়ার হাত থেকে বাঁচতে এই সেফহাউসগুলিই মহিলাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করেছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে ১৫ অগস্ট কাবুল দখল করার পর থেকে তালিবানরা মহিলাদের ওপর বেশ কিছু দমন নীতি পুনরায় চাপিয়ে দিয়েছে। যা মনে করিয়ে দিচ্ছে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তাদের নৃশংস শাসন।

নতুন তালিবান জমানায় মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে, মেয়েরা কাজ করার অধিকার হারিয়েছে। তুলে দেওয়া হয়েছে নারী বিষয়ক মন্ত্রক। পুনরুজ্জীবন ঘটানো হয়েছে ভয়ংকর নীতি পুলিশের।

গ্রীষ্মে বিদ্যুৎবেগে আফগান শহরগুলি তালিবানরা দখল করার সময় থেকে অনেক শেল্টারই বন্ধ হতে শুরু করে তালিবান কোপে পড়ার ভয়ে। অনেক ক্ষেত্রে শেল্টারের কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে আশ্রিত মহিলাদের সঙ্গেই হোম ছেড়ে পালিয়ে যান।

সমাজকর্মীদের আশঙ্কা, যে সব মেয়ে বা মহিলা ঘরে ফিরে যাবেন তাঁরা বাড়ি থেকে পালানোর অপরাধে অনার কিলিংয়ের শিকার হতে পারেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নারী অধিকার বিষয়ক অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর হিদার বার বলেছেন, মহিলা এবং মেয়েরা শেল্টার থেকে বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরছে। যে হিংসার হাত থেকে বাঁচবার জন্য তাঁদের বাড়ি ছেড়ে পালানোর প্রয়োজন হয়েছিলো আবার তাঁদের সেই হিংসার শিকার হতে হবে।

বার বলেছেন, মহিলাদের সুরক্ষা ও জীবন নিয়ে কারণ এমন সময়ে তারা তাদের নিপীড়কদের কাছে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন যখন মহিলাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন রোখার কোন ব্যবস্থাই অবশিষ্ট নেই।

কাবুলে এমনই এক শেল্টার হোমের প্রধান তাঁর নাম না প্রকাশ করার শর্তে সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, তালিবানরা কাবুলে প্রবেশ করার পরে তিনি ভয়ংকর দোটানায় পড়ে গেছেন। তাঁকে হয় হোম খুলে রেখে আশ্রিতা ও কর্মীদের তালিবানের কোপের সামনে পড়তে দিতে হবে অথবা হোম বন্ধ করে আশ্রিতাদের বাড়িতেই ফেরত পাঠাতে হবে, যেখানে তাঁরা অত্যাচারের শিকার হয়েছিলেন।

তবে মহিলাদের অনুরোধেই তাদের তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। পরিবারকে দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হয় যে তারা পুনরায় অত্যাচার করবে না। তালিবানদের বিশ্বাস নেই, তাই বাধ্য হয়ে শেল্টার হোম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আফগানিস্তানে তালিবানরা ক্ষমতায় ফেরার আগে থেকেই মহিলাদের শেল্টারগুলি ওই গোঁড়া ও পিতৃতান্ত্রিক দেশে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে,আফগানিস্তানে বাড়িতে মহিলাদের ওপর অত্যাচার অতি সাধারণ ঘটনা। জোর করে বিয়ে দেওয়াটাই যেন নিয়মের মধ্যে পড়ে। গোটা বিশ্বে আফগানিস্তানেই মহিলাদের আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। যদিও ২০০১এর শেষ থেকে মার্কিন অভিযানের পরে মহিলাদের অধিকার রক্ষায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে।

- with inputs from IANS

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in