অল্প খরচে যে কোনও অপারেশন, অনলাইনে ফাঁদ পেতেছে দালালচক্র, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি চিকিৎসকদের

রাজ্যের শল্যচিকিৎসকদের সংগঠনের বক্তব্য, অস্ত্রোপচার কোনও বাড়ি কেনাবেচা নয়। যেখানে, সকালে রোগী এল, দুপুরে অপারেশন হল। অস্ত্রোপচার করার আগে রোগীর মেডিক্যাল হিস্ট্রি পড়তে হয় খুঁটিয়ে।
ছবি - প্রতীকী
ছবি - প্রতীকী

চাকরির টোপ দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ প্রায়দিনই খবরের শিরোনাম হয়। ভুয়ো সরকারি আধিকারিকের নানা কর্মকাণ্ডের খবর প্রায়ই শোনা যায়। এবার প্রকাশ্যে এল চিকিৎসা নিয়ে অনলাইনে বিজ্ঞাপনের ফাঁদে দালালচক্রের প্রতারণা।

চক্রটি কীভাবে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে? অল্প খরচে যে কোনও অপারেশন হয়ে যাবে। এমনই প্রতিশ্রুতি থাকে অনলাইনে বিজ্ঞাপনে। কী লেখা থাকে? দেখা যায়, গলব্লাডারে স্টোন? অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথায় কাতর? মাত্র ৫০ হাজারে অপারেশন করান। এইধরনের প্রতিশ্রুতি থাকে।

এতে ক্ষোভ প্ৰকাশ করেছেন বাংলার সার্জনরা। বলছেন, এটা চিকিৎসা না ফ্ল্যাট কেনাবেচা, বোঝা যাচ্ছে না। এই ধরনের বিজ্ঞাপনকে মান্যতা দিতে চাইছে না ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিল। কাউন্সিলের রেগুলেশনের ৭.১৯ পরিচ্ছেদে বলা আছে, কোনও চিকিৎসক রোগীর ভিড় বাড়ানোর জন্য কোনওরকম দালাল, এজেন্টকে ব্যবহার করতে পারবেন না। তাহলে কী করে এমনটা সম্ভব হচ্ছে? প্রশ্ন চিকিৎসক মহলের।

দেশের শল্য চিকিৎসকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ মিনিমাল অ্যাসেস সার্জনস অফ ইন্ডিয়া বা এএমএএসএআই বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। বাংলায় সংগঠনের সম্পাদক প্রসিদ্ধ শল্য চিকিৎসক ডা. মাখনলাল সাহা জানান, অনলাইনে বিজ্ঞাপনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে সংগঠন জানিয়েছে, প্র‍্যাক্টো, হেলথিয়ানস, প্রিস্টিনে-র মতো বেশ কয়েকটি মোবাইল অ্যাপে সস্তায় চিকিৎসা পাইয়ে দেওয়ার বেআইনি বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে। মুষ্টিমেয় শল্যচিকিৎসক এদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। কী সেই চুক্তি? প্রথমত, অপারেশন করানোর জন্য এই অ্যাপগুলির মাধ্যমে লোভনীয় রেট দেওয়া হয়। তার মধ্যেই দালালদের কমিশন ধরা থাকে। অস্ত্রোপচারের পর ওই টাকা কেটে শল্যচিকিৎসকের পাওনা মেটানো হচ্ছে।

রাজ্যের শল্যচিকিৎসকদের সংগঠনের বক্তব্য, অনেক চিকিৎসকের পসার নেই। তাঁরাই এই ধরনের অ্যাপের মাধ্যমে রোগী ধরছেন। অস্ত্রোপচার কোনও বাড়ি কেনাবেচা নয়। যেখানে, সকালে রোগী এল, দুপুরে অপারেশন হল। আর বিকেলে বাড়ি ফিরে গেল। তাঁদের কথায়, অস্ত্রোপচার করার আগে রোগীর মেডিক্যাল হিস্ট্রি পড়তে হয় খুঁটিয়ে। কোনও অসুখ হওয়ার নেপথ্যে নানা কারণ থাকতে পারে। সেসব না জেনেবুঝে অস্ত্রোপচার করা যায় না। ভবিষ্যতে এই রোগীদের কোনও শারীরিক ক্ষতি হলে তার দায় কার?

শল্যচিকিৎসকদের সংগঠনের দাবি, চিকিৎসকরা পণ্য নয়। অবিলম্বে এই ধরনের অ্যাপকে ব্যান করে দিতে হবে। যে হাসপাতাল এদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে হবে।

ছবি - প্রতীকী
Union Budget 2022: কোভিড সমস্যা মোকাবিলার জন্য এই বাজেটে কিছুই নেই - পিনরাই বিজয়ন

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in