করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফ্রন্টলাইনে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশে টিকাকরণ অভিযান শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অভিযান শুরু করেন তিনি। টিকাকরণ শুরু হলেও করোনা স্বাস্থ্যবিধি এখনও মেনে চলতে হবে বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
দেশে করোনা সংক্রমণ যখন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে সেই সময়কার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "সেই সঙ্কট এবং হতাশার মুহূর্তেও কেউ কেউ আমাদের আশা দিয়েছিলেন। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিক্যাল স্টাফ, অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার, আশা কর্মী, স্যানিটেশন কর্মী, পুলিশ এবং অন্যান্য কর্মীরা। মানবতার প্রতি তাঁদের কর্তব্যকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন তাঁরা। বহু দিন নিজেদের পরিবার, সন্তানদের থেকে দূরে থেকেছেন তাঁরা। আজ সেই ফ্রন্টলাইনে থাকা কর্মীদের প্রথমে টিকা দিয়ে, সমাজ তাঁদের ঋণ পরিশোধ করছে।"
ভারতীয় বিজ্ঞানীদের দক্ষতার প্রশংসা করে তিনি আরো বলেন, "বিজ্ঞান বা মানবজাতি কেউই এই ধরনের মহামারীর জন্য প্রস্তুত ছিল না। একটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে ভারতেই আমরা দুটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে পেরেছি। এটা আমাদের বিজ্ঞানীদের দক্ষতা ও প্রতিভার প্রমাণ।"
দীর্ঘ অপেক্ষার পর আজ পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশে করোনা টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফায় মোট ৬ লক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়া হবে। অনেক আগেই এঁদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মোট ২১২টি জায়গায় এই কর্মসূচি হচ্ছে। এঁদের প্রত্যেকের শরীরে অ্যাস্ট্রাজেনকা এবং অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। এই ভ্যাকসিনটির দু'টি ডোজ আছে। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রধানমন্ত্রীও একথা বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর, দ্বিতীয় ডোজটি কবে কোথায় দেওয়া হবে, তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মোবাইলে জানিয়ে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় পুলিশ, স্যানিটাইজেশন কর্মীদের মতো করোনা যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হবে। এরপরের ধাপে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্তারা পাবেন। চতুর্থ ধাপে পঞ্চাশের বেশি বয়সের ব্যক্তিরা এবং কোমর্বিডিটিতে ভোগা রোগীরা টিকা পাবেন। সবের শেষ ধাপে সাধারণ মানুষ টিকা পাবেন। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইচ্ছুক ব্যক্তিদের প্রথমে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে পৌঁছে 'কোউইন' অ্যাপে নাম ও পরিচয় নথিভুক্ত করতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরই তাঁর শরীরে টিকা প্রয়োগ করা হবে।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।