
দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের চর্চা ছেড়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চর্চা বাঙ্গালী ধরেছে বেশ কিছুদিন। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ অন্য খবর করবে কী! আপাতত তাঁদের দম ফেলবার ফুরসৎ নেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঠেলায়। সব সমস্যা তো আর ট্রাফিক সিগন্যালে রবীন্দ্রনাথ ঝুলিয়ে সমাধান করা যায় না। কসমেটিক ডেভালপমেন্টেও না। উপরে চিকন চাকন যতই হোক, ভিতরের খড়ের গাদন মাঝে মাঝেই দাঁত বের করে ভেঙচি কাটে। তাইতো কোচবিহার থেকে কেওড়াতলা, জয়নগর থেকে জয়গাঁ, খাগড়াগড় থেকে নারায়ণগড় প্রতিদিনই সম্মিলিত সুরে গেয়ে ওঠে – 'আরো আরো প্রভু আরো আরো, এমনি করে, এমনি করে আমায় মারো।'
কে কাকে মারবে, কখন মারবে, কীভাবে মারবে তা ঠিকমত বুঝে ওঠার আগেই প্রতিদিন বেশ কিছু মানুষ খরচের খাতায় চলে যাচ্ছেন। পরিবারের বুক চাপড়ানো কান্না থামতে না থামতেই কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি ডোল হাজির হয়ে যায় – দু লাখ, পাঁচ লাখ – বডির দাম ঠিক হয় গহীন অন্ধকারে। রাত ক্রমশ গভীর হয়। নিকষ কালো আঁধারে ঢেকে যায় সুজলা, সুফলা, শস্যশ্যামলা মা আমার।
কে মাদার, আর কে যুব – তার লড়াই থামানোর আগে চলে বখরা বুঝে নেবার পালা। সিন্ডিকেট হোক কী বালি খাদান, কলেজে ভর্তি হোক কিংবা দলবদলের উপঢৌকনে চাকরির টোপ – যাই হোক না কেন, বখরা ছাড়া ধোপে টেকে না কিছুই। দিনের শেষে হোক বা শুরুতে – ‘ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু’ বলেও রেহাই মেলে না।
আগে ছিলো – গতস্য শোচনা নাস্তি। আর এই চরম এবং পরম সময়ে বাঙ্গালীর প্রাপ্তির খাতায় জুটেছে একমাত্র দার্শনিক আপ্তবাক্য - যা গেছে তা যাক। অতএব… চরৈবেতি, চরৈবেতি এবং চরৈবেতি…
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন